সম্প্রতিক অর্জন, চ্যালেঞ্জ ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাঃ
দেশের প্রাণিজ আমিষের চাহিদা পুরণের লক্ষ্যে গবাদিপশুর জাত উন্নয়ন করে মুখ ও আংদের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য পরিচালক, কৃত্রিম প্রজনন দপ্তর, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর, বাংলাদেশ, ঢাকা পুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। ভূমিহীন, খেটে খাওয়া মানুষের আয়ের উৎস হিসেবে উন্নত জাতের গাভী পালন পুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে। গ্রামবাংলার অনেক কৃষক শুধুমাত্র দুধ বিক্রির অর্থ দিয়ে তাঁদের জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। এছাড়াও এ অঞ্চলের মানুষের প্রাণিজ আমিষের চাহিদা পুরন, কর্মসংস্থান, নারীর ক্ষমতায়ন, পুঁজি বিনিয়োগ, মাংস, দুধ ও অন্যান্য প্রাণিজাত পণ্য উৎপাদনে স্বনির্ভরতা অর্জন, জৈব সার উৎপাদন করে রাসায়নিক সারের উপর নির্ভরশীলতা কমানো, জমির উর্বরা শক্তি বৃদ্ধি, মাংস ও পশুজাত পণ্য রপ্তানী, পল্লী এলাকায় বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট স্থাপনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদন ইত্যাদিতে গবাদিপশু পালন ব্যাপক ভূমিকা রেখে আসছে। শতাদিপশুর জাত উন্নয়নে দুধ উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলশ্রুতিতে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের প্রত্যক্ষ সহযোগীতায় ৪৫০০ জন বেকার যুবককে এ আই টেকনিশিয়ান (স্বেচ্ছাসেবী) হিসেবে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা হয়েছে। বর্তমানে ২২১ মিলি/জন/দিন দুধ,১৪০ গ্রাম/জন/দিন মাংস ও ১৩৭টি /জন/বৎসর ডিমের প্রাপ্যতা নিশ্চিত করা হয়েছে যা দেশের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার প্রাণিজ আমিষের চাহিদা মেটাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। বিগত তিন বছরে জেলা কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্র, বরিশাল কর্তৃক অর্জন ও অবদান নিম্নে তুলে ধার হলো।
নং |
বিবরণ |
একক |
২০২১-২২ |
২০২২-২৩ |
২০২৩-২৪ |
১ |
গরম হওয়া গাভী ও বকনাতে কৃত্রিম প্রজনন |
সংখ্যা (হাজার) |
33.4 |
31.0 |
29.1 |
২ |
কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে বাছুর উৎপাদন |
সংখ্যা (হাজার) |
12.6 |
12.4 |
12.357 |
3 |
প্রাকৃতিক ভাবে ছাগীকে স্বাভাবিক প্রজনন |
সংখ্যা (টি) |
655 |
649 |
650 |
সমস্যা ও চ্যালেঞ্জঃ
মাঠ পর্যায়ের প্রান্তিক খামারীগণ গবাদিপশু পালনে ব্যাপক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করছে। গবাদিপশুর গুণগত মানসম্পন্ন খাদ্যের অপ্রতুলতা,রোগের প্রাদুর্ভাব, সুষ্ঠু সংরক্ষণ ও বিপণন ব্যবস্থার অভাব, লাগসই প্রযুক্তির অভাব, সচেতনতার অভাব, প্রণোদনামূলক উদ্যোগের অভাব, উৎপাদন সামগ্রীর উচ্চ মূল্য, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব, সীমিত জনবল ও বাজেট প্রাণিসম্পদ উন্নয়নে অন্যতম চ্যালেঞ্জ।
ভবিষ্যত পরিকল্পণাঃ
ভিশন ২০৪১ অনুযায়ী প্রাণিজ আমিষের ঘাটতি পুরণের লক্ষ্যে দুধ ও মাংসের উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্যমাত্রা গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া এ খামার হতে উন্নত জাতের শংকর বাচ্চা উৎপাদন করে বিধিমত সরকারি ও বেসরকারি খামারে সরবরাহের মাধ্যমে দেশে প্রানিজ আমিষের ঘাটতি পূরণ করা। তাছাড়া প্রাণিসম্পদের টেকসই উৎপাদন নিশ্চিত করার পাশাপাশি খামারীদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আমিষের উৎপাদন বৃদ্ধি, বেকারত্ব লাঘব ও আয়বৃদ্ধির মাধ্যমে কাংখিত আর্থ সামাজিক উন্নয়ন নিশ্চিত করন।
সরকারের নির্বাচনী অঙ্গীকার, অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা, BDP-২১০০ এবং ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজি অর্জনে এবং প্রেক্ষিত পরিকল্পণা ২০৪১ বাস্তবায়নে প্রাণিজাত পণ্যের যথাযথ উৎপাদন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বাজার ব্যবস্থার সংযোগ জোরদার করণ, পণ্যের বহুমুখী করণ, ফুডসেফটি নিশ্চিত করণ এবং ক্যাটেলই নসুরেন্স ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হবে। গবাদিপশু ও পাখির রোগ নিয়ন্ত্রণ, নজর দারি, চিকিৎসা সেবার গুণগত মান উন্নয়ন এবং রোগ অনুসন্ধান গবেষণাগার স্থাপন করা হবে। দুগ্ধ ও মাংস লজাতের গরু উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য কৃত্রিম প্রজনন কার্যক্রম সম্প্রসারণের মাধ্যমে গরু-মহিষের জাত উন্নয়ন এবং অধিক মাংস উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন গরুর জাত উন্নয়ন করা হবে। পশুখাদ্যের সরবরাহ বাড়াতে উন্নত জাতের ঘাসচাষ সম্প্রসারণ, টিএমআর প্রযুক্তির প্রচলন ও পশুখাদ্যের মাননিয়ন্ত্রণ গবেষণাগার স্থাপন করা হবে। তাছাড়া প্রাণিসম্পদের টেকসই উৎপাদন নিশ্চিত করার পাশাপাশি প্রাণিজ আমিষের নিরাপত্তা বিধান, আপামর জনগোষ্ঠীর পুষ্টির চাহিদা পূরণ, রপ্তানি আয় বৃদ্ধি ও অভিষ্ঠ জনগোষ্ঠীর অংশ গ্রহণের মাধ্যমে কাঙ্খিত আর্থসামাজিক উন্নয়ন নিশ্চিত করণ। সর্বোপরি, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সাথে সংশ্লিষ্ট SDG-এর ৯টি অভীষ্ট ও ২৮টি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর ইতোমধ্যে কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করেছে যা সরকারের নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরে জেলা কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্র, বরিশাল কর্তৃকসম্ভাব্য অর্জনঃ
১। 34হাজার টি গাভী ও বকনাতে কৃত্রিম প্রজনন
২। 13.6 হাজার টি বাছুর উৎপাদন
৩। 600 টি ছাগীকে প্রাকৃতিক প্রজনন
৪। 20টি হাইমেরিট বুল থেকে জন্ম নেয়া বকনা/গাভীর উৎপাদনের তথ্য সংগ্রহ
৫। 20 জন সরকারি/বেসরকারি কৃত্রিম প্রজনন কর্মীর কার্যক্রম পরিদর্শন
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস